মানুষ চেষ্টা করেও নিজের অভাব দূর করতে পারেন না, যদি না ভগবানের কৃপা প্রাপ্ত হওয়া যায়। একমাত্র ভগবানের কৃপা প্রাপ্ত হলেই চিরতরে নিজেদের অভাব-দুর্দশার থেকে মুক্তি পেতে পারে একজন মানুষ। ধন, সমৃদ্ধি ও সম্পদের দেবী রূপে পূজিতা হন মা লক্ষ্মী। তাই কেউ যদি দেবী লক্ষীকে প্রসন্ন করতে পারেন তাহলে তার অভাব চিরতরে ঘুচে যায়।
দেবী লক্ষ্মীকে গৃহে অচলা করে রাখতে চাইলে কতকগুলি উপায় অবলম্বন করুন। সেই উপায় গুলি অবলম্বন করলে অবশ্যই দেবী লক্ষী আপনার প্রতি প্রসন্না হবেন। সেই কাজ গুলি কী কী চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ক। আপনি যদি প্রতিদিন স্নান করার পর শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে ১০৮ বার গায়ত্রী মন্ত্র জপ করেন তাহলে অবশ্যই দেবী প্রসন্না হবেন।
খ। মা লক্ষ্মীর শঙ্খ বলা হয় দক্ষিণাবর্ত শঙ্খকে। তাই দেবী লক্ষ্মীর কৃপা পেতে চাইলে লাল বা সাদা অথবা হলুদ রংয়ের একটি পরিষ্কার কাপড় , একটি রূপোর পাত্র, একটি মাটির পাত্রের উপরে এই শঙ্খ রাখতে হয়। এইভাবে শঙ্খটি রাখলে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
গ। সকল দেবতারা তুলসী গাছে বসবাস করেন। সনাতন ধর্মে আবার বলা হয় দেবী তুলসী মা লক্ষ্মীর আরেক রূপ। তাই বাড়িতে অবশ্যই তুলসী গাছ রাখুন এবং সেখানে সকাল সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালান। এতে দেবী লক্ষী সন্তুষ্ট হন।
ঘ। দেবী লক্ষ্মীর কৃপা পেতে চাইলে টানা ১২ দিন ধরে ভক্তি ভরে লক্ষ্মী দেবীর দ্বাদশ স্তোত্র ১২ বার উচ্চারণ করলে ঋণের থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ঙ। স্বয়ং নারায়ন কৃষ্ণ স্বরূপে দ্বাপর যুগে লীলা করেছিলেন। এই কৃষ্ণ অবতারে ভগবানের অন্যতম প্রিয় হলো বাঁশি। তাই একটি বাঁশিকে সিল্কের কাপড়ে মুড়ে যদি ঠাকুরের সিংহাসনে রাখেন তাহলে নারায়ন পত্নী লক্ষী দেবী অত্যন্ত খুশি হন।
চ। শুধু বৃহস্পতিবার পুজোর দিনে নয়, সপ্তাহের প্রতিদিনই যদি ঘরে দেবী লক্ষ্মীর পা রাখেন তবে তা গৃহের জন্য অত্যন্ত শুভ বার্তা আনে ও দেবীর কৃপা গৃহের ওপর পড়ে।
ছ। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার পদ্মমূল থেকে তৈরি নয়টি সলতে দিয়ে একটি মাটির প্রদীপ মা লক্ষ্মীর চিত্র অথবা বিগ্রহের সামনে জ্বালিয়ে দিলে দেবীর কৃপায় গৃহে সমৃদ্ধি ঘটবে।
জ। দেবী লক্ষ্মীর বিগ্রহ বা চিত্রপটের সামনে প্রতিদিন ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালান। দেবী লক্ষীকে পদ্ম, নারকেল ও ক্ষীরের নৈবেদ্য নিবেদন করুন।
ঞ। কড়ি হলো দেবী লক্ষ্মীর চিহ্ন স্বরূপ। তাই, ঠাকুরের সিংহাসনে কড়ি ও শঙ্খ রাখুন।
দেবী লক্ষীকে প্রসন্ন করতে চাইলে যেমন উপরিউক্ত কাজ গুলো করতেই হবে। তেমনি এমন কতগুলি কাজ আছে যেগুলি করলে দেবী রুষ্ট হয়ে যান। তাই ভুলেও এই কাজ গুলি করবেন না। সেই কাজগুলি কী কী চলুন জেনে নিই একনজরে-
১। নিত্য কলহঃ
যে গৃহে নিত্য কলহ লেগে থাকে, সেই গৃহ থেকে দেবী লক্ষী বিদায় নেন আর দেবী লক্ষ্মীর বিদায় নেওয়ার ফলে গৃহে অভাব ও আর্থিক অনটন শুরু হয়ে যায়।
২। বয়স্ক মানুষদের অপমানঃ
গৃহের মধ্যে থাকা বয়স্ক মানুষদের কখনো অপমানিত করবেন না। এমনটা করলে দেবী লক্ষ্মী রুষ্ট হয়ে যান। তাই যদি দেবী লক্ষ্মীর কৃপা বজায় রাখতে চান, তাহলে বৃদ্ধ মানুষদের সম্মান করুন, তাদের ইচ্ছাকে সম্মান করুন ও তাদের সেবা করুন।
৩। মিথ্যা ভাষণঃ
দেবী লক্ষ্মী হলেন নারায়ণ পত্নী আর নারায়ণ সব সময় সত্য ও ধর্মের পাশে থাকেন। তাই যদি দেবী দেখেন, কেউ ঘনঘন মিথ্যে কথা বলছেন তাহলে দেবী লক্ষী তার ওপর রুষ্ট হয়ে যান আর দেবী লক্ষ্মীর রুষ্ট হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো, সংসারের নিত্য অভাব ও অনটনের সৃষ্টি হওয়া। তাই যদি দেবী লক্ষ্মীর কৃপা পেতে চান তাহলে সব সময় সত্যি কথা বলবেন।
৪। অন্নের অপমান করাঃ
অনেকেই থালা ভর্তি ভাত ছুঁড়ে ফেলে দেন, অনেকেই অন্নের অপমান করেন। এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছেন, যারা দুই বেলা ভালো মতো খেতে পারেন না, তাই অন্নের অপমান করার এই বদ অভ্যাসটা ছাড়তে হবে আর পূর্বে যদি কখনো এই ভুল করে থাকেন তাহলে অবশ্যই দেবীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন।