বেকার যুবক যুবতীদের জন্য এই সময়টা অত্যন্ত দুঃসময়। প্রচুর মানুষ শিক্ষিত হয়েও আজ চাকরি পাচ্ছেন না। ইংরেজিতে এমএ পাশ করে চায়ের দোকান খুলেছেন এমন নজিরও দেখা যাচ্ছে আশেপাশে। শিক্ষিত সম্প্রদায় তাই হতাশায় ভুগছেন। আসলে আজকালকার দিনে চাকরির যা বাজার, বহু যুবক যুবতী উচ্চ শিক্ষিত হয়েও বেকার হয়ে বসে আছেন তাই আজকের এই লেখায় তুলে ধরলাম এমন ছয়টি উপায় যার দ্বারা আপনি সম্মানের সাথে রোজগার করতে পারবেন সহজেই।
১। মেকআপ আর্টিস্ট-
অল্প টাকায় কোন একটি প্রফেশনাল কোর্স করে নিন, তারপর নিজের কোনো বন্ধু বান্ধবী অথবা চেনা-পরিচিত মানুষকে সাজিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দেখান আপনার দক্ষতা। এরপর বাজার দর অনুযায়ী মেকআপ করার জন্য একটি রেট ঠিক করুন, আপনি যত ভালো মানুষকে সাজাতে পারবেন অল্প টাকায়, তত আপনার পরিচিতি বাড়বে। বহু বেকার যুবক-যুবতী এই ভাবেই রোজকার করছেন।

২। ফটোগ্রাফার-
ফটোগ্রাফি সম্পর্কে যদি আপনার ভালোমতো নলেজ থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। আজকালকার দিনে বিয়ে, পৈতে বাড়ি, অনুষ্ঠান বাড়ির সমস্ত কিছুতেই ফটোগ্রাফারদের রমরমা। ফটোগ্রাফি সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকলে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের কতগুলি কাজের স্যাম্পেল প্রদান করুন আর লিখে দিন যে কোন অনুষ্ঠান বাড়িতে আপনি খুবই সুলভ মূল্যে ফটো গ্রাফি করে থাকেন। আপনি চাইলে যারা ভিডিওগ্রাফির কাজ করে তাদের সাথে যুক্ত হয়ে একটা প্যাকেজ সিস্টেমও করে নিতে পারেন আর যদি ভিডিওগ্রাফি সম্পর্কে আপনার নলেজ থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই।

৩। টেলার-
বর্তমান যুগের টেলারিং ব্যবসা ভীষণ জনপ্রিয়। আপনার যদি টেলারের কাজ জানা থাকে তাহলে আপনি ঘরে বসেই রোজগার করতে পারবেন আপনার শুধু দরকার একটি মেশিনের ব্যাস তাহলেই আর দেখতে হবে না।
৪। বায়োডাটা মেকার-
আপনি যদি বায়োডাটা মেকিং এর কাজ জানেন, তাহলে এই সামান্য কাছ থেকেই আপনার অর্থ রোজগার হবে এক্ষেত্রে আপনার একটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার দরকার। প্রচুর বেকার যুবক-যুবতী বায়ো ডাটা তৈরি করতে এরকম দোকানের খোঁজ করেন আর যদি স্কুল বা কলেজের পাশে এরকম একটি কম্পিউটার নিয়ে বসতে পারেন তাহলে তো আর কথাই নেই। আপনার ভাগ্য দুদিনে খুলে যাবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন চাকরির ফর্ম ফিলাপের নোটিশ ঝুলিয়ে দেবেন, যাতে চাকরির ফর্ম ফিলাপ করতে ছাত্রছাত্রীরা আপনার কাছেই আসেন। অন্যান্য দোকানগুলি তুলনায় একটু কম অর্থ নির্ধারণ করবেন তাহলেই দেখবেন আপনি লাভবান হয়ে উঠেছেন।
৫। জেরক্স সেন্টার-
বর্তমানে জেরক্স সেন্টারের রমরমা চারিদিকে। কোচিং সেন্টারের আশেপাশে তো জেরক্স সেন্টারের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। তাই আপনি একটি জেরক্স মেশিন কিনে আপনার বাড়ির সামনের কোন বারান্দাতে বসলেও দিনশেষে দু পয়সা ইনকাম করতে পারবেন।

৬। সিম রিচার্জ-
আজকালকার দিনে মোবাইল ফোন ছাড়া মানুষ অচল, তাই প্রচুর মানুষ আছেন যারা বাড়ির পাশে ছোট্ট খাটো দোকান খুলে সিম রিচার্জ করেই অর্থ ইনকাম করেন।
উপরে যে সকল উপায়ে গুলির কথা বলেছি এগুলির সবগুলিই খুব নামমাত্র অর্থ ব্যয় করেই করা সম্ভব। তবে হ্যাঁ মানসিকতাকে স্বচ্ছ রাখতে হবে। যে হারে বেকারের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে, সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কোন মানুষ যদি নিজের ইগো নিয়ে বসে থাকেন তাহলে রোজগার করা সত্যিই খুব মুশকিল। কিন্তু যারা প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত হন তারা জানেন কোন কাজই ছোট নয়, এই কারণে স্বয়ং বিদ্যার জাহাজ বিদ্যাসাগর একজন ভদ্রলোকের বোঝা বয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কুলির খোঁজ করছিলেন বলে নিজের পরিচয় না দিয়ে বিদ্যাসাগর স্বয়ং তার বোঝা বয়ে দেন- আসলে যে যত বেশি শিক্ষিত হয় সে তত বেশি বিনয়ী হয়, শিক্ষার মূল কথাই এই। যদি কোন মানুষ সত্যিই শিক্ষিত হয় তাহলে তার মুখের ভাষা এবং আচার আচরণের মধ্য দিয়েই তার শিক্ষার প্রকাশ পাবে। সে কতদূর পড়ে কী কর্ম করছে সেটা বড় কথা নয়, সে সৎ উপায়ে রোজগার করছে এটাই বড় কথা।